বরেন্দ্র অঞ্চল: প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও চাষাবাদের সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৫; সময়: ৪:০৬ অপরাহ্ণ |

রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার বিস্তৃত অংশজুড়ে অবস্থিত বরেন্দ্র এলাকা বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক অঞ্চল। খরাপ্রবণ এবং অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টিপাতের জন্য পরিচিত হলেও, এই অঞ্চলে সম্প্রতি কৃষি, সেচ এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।

বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) দীর্ঘদিন ধরে আধুনিক সেচব্যবস্থা, টিউবওয়েল স্থাপন এবং পানি ব্যবস্থাপনার উন্নতির মাধ্যমে এই অঞ্চলের কৃষিতে প্রাণ ফিরিয়ে এনেছে। আগের তুলনায় এখন অনেক কৃষক বছরে দুই থেকে তিনটি ফসল তুলতে সক্ষম হচ্ছেন। বিশেষ করে ধান, গম, ভুট্টা, সবজি ও বিভিন্ন ফলের চাষে বরেন্দ্র অঞ্চল এখন উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখাচ্ছে।

তবে শুধু কৃষিই নয়, বরেন্দ্র অঞ্চলের ইতিহাসও কম সমৃদ্ধ নয়। প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়াম, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, মহাস্থানগড়ের মতো স্থাপনাগুলো এই এলাকার অতীত গৌরবের সাক্ষী। পর্যটন খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে এই ঐতিহ্যবাহী এলাকাগুলোকেও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, আগের চেয়ে এখন কৃষিতে ঝুঁকি কিছুটা কমেছে। সেচের সুবিধা থাকায় তাঁরা নানাবিধ চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। তবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কমে যাওয়া এবং কিছু কিছু অঞ্চলে মাটির উর্বরতা হ্রাসের কারণে আগামীতে টেকসই কৃষির জন্য আরও পরিকল্পিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।

বরেন্দ্র অঞ্চলের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কৃষি প্রযুক্তির প্রসার, পানি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন এবং পরিবেশবান্ধব কৃষি কৌশল বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ এবং স্থানীয় জনগণের সচেতনতায় বরেন্দ্র এলাকা আগামী দিনে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

[TheChamp-FB-Comments style="background-color:#f0f0f0"]
উপরে